শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

আঙ্গুর ফল খাওয়ার উপকারিতাপ্রিয় পাঠক আমি আপনাদেরকে আমার এই আর্টিকেলে শিশুদের রোগ প্রতির ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনারা যদি আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন।

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

তাহলে আপনারা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

ভূমিকাঃ

শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই তাদের প্রতি আমাদের যত্নশীল হওয়া উচিত। আমরা কিভাবে শিশুদের যত্ন নিব এজন্য শিশুদের খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। তাদের চলাফেরা দিকে নজর দিতে হবে। তাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে।

সর্বোপরি বলতে চাই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়ঃ

শিশুদের সঠিক বিকাশ ও পুষ্টি চাহিদার জন্য শিশুদেরকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো অতি জরুরী। শিশুরা যতই বড় হবে তাদের বিকাশ ও পুষ্টি চাহিদা ততই বাড়বে। তাই তাদেরকে সবসময় পুষ্টিকর খাবার খেতে দিতে হবে।

অনেক সময় শিশুরা শাকসবজি খেতে চায় না কিন্তু তাদেরকে সঠিক পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য শাকসবজি খাওয়াতে হবে। এছাড়া শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য সঠিক খাওয়া-দাওয়া টা অত্যন্ত জরুরী।
 
পুষ্টিকর খাবারই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসুন জেনে নেই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

দুধ খেতে হবে

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, প্রোটি্ন ও কার্বোহাইড্রেট যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অনেক বাচ্চাই আছে যারা দুধ খেতে একেবারে পছন্দ করে না।

সে ক্ষেত্রে দুধ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে খাওয়ানো যেতে পারে এতে দুধের চাহিদা পূরণ হবে এবং শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

দই খেতে হবে

দই এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন যা বাচ্চাদের দাঁত ও হাড়কে মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া শিশুদের খাবার হজম করতে দই সাহায্য করে।দই বাচ্চারা খেতে পছন্দ করে তাই নিয়মিত তাদেরকে দই খাওয়ানো উচিত। এতে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

ডিম খেতে হবে

শিশুদের পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ । প্রতিদিন যদি একটি করে ডিম খাওয়ানো যায় সে ক্ষেত্রে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। 

এছাড়া প্রতিদিন যদি একটি করে ডিম খাওয়া যায় এতে মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ডিমের হয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ ও ভিটামিন এর জন্য বিশেষ করে সেদ্ধ ডিম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

ভিটামিন এ যুক্ত খাবার

ভিটামিন এ শিশুদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিশুদের শরীরে জীবাণু এবং ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে। তাই শিশুদেরকে ভিটামিন এ যুক্ত খাবার বেশি বেশি খাওয়ানো উচিত। ভিটামিন এ যুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে যেমনঃ পাকা পেঁপে, গাজর, শাকসবজি ইত্যাদি।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

ভিটামিন সি যুক্ত খাবার শিশুদের শরীরের জন্য খুবই উপযোগী। শিশুদের দেহের শ্বেত রক্তকণিকা দেহের কোষগুলোকে ভিটামিন সি সুরক্ষিত রাখে। ভিটামিন সি ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খুবই জরুরী। ভিটামিন সি যুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে কমলালেবু, আমলকি, লেবু ইত্যাদি এই ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।

তুলসী পাতা

শিশুরা ধীরে ধীরে যখন বড় হতে থাকে তখন তারা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে চায় না। এক্ষেত্রে আপনি আপনার শিশুকে গরম পানির সাথে তুলসী পাতা খাওয়াতে পারেন। এছাড়া আপনি চাইলে জুস এর সাথেও তুলসী পাতা মিক্স করে খাওয়াতে পারেন যা শিশুদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

সুপ খাওয়াতে পারেন

শিশুরা কোন কিছুই ঠিকভাবে খেতে চায় না এ নিয়ে আমরা অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ি। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন সবজি দিয়ে স্বাস্থ্যকর সুপ তৈরি করে শিশুদের খাওয়াতে পারেন। কারণ সুপ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফলমূল

আপনি আপনার শিশুকে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খাওয়াতে পারেন। ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা আপনার শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই শিশুদেরকে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খাওয়ানো উচিত।

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ভিটামিনঃ

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন খাওয়ানো হয়ে থাকে। যেমন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, জিংক এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন তাদেরকে খাওয়ানো হয়ে থাকে।

যেহেতু শিশুরা কোন কিছু ঠিকভাবে খেতে চায় না যার ফলে অনেক পুষ্টির চাহিদার ঘাটতি পরে। এর জন্য অনেক ডাক্তারের পরামর্শে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন জাতীয় ঔষধ শিশুদেরকে খেতে দেওয়া হয়। যাতে তাদের বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

শিশুদের প্রতি যত্নশীল হওয়াঃ

অভিভাবক হিসেবে আমাদের শিশুদের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত। কারণ শিশুরা কোন কিছুই ঠিক ভাবে করতে পারেনা তাই তাদের দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। যাতে তারা খাওয়া-দাওয়া করে, ঠিকভাবে ঘুমায় এবং খেলাধুলা করে এছাড়া তাদের স্বাস্থ্যের দিকেও আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে।

আমরা যদি শিশুদের প্রতি যত্নশীল হয় তাহলে শিশুরা অনেক ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে। শিশুদের মন যেহেতু নরম তারা যা দেখবে তাই শিখবে। তাই শিশুদের সামনে আমাদের এমন কোন কিছু করা যাবে না যাতে তাদের মনের উপর প্রভাব পড়ে।

তাই শিশুদের প্রতি যত্নশীল হতে হলে আমাদের নিজেদেরকে আগে যত্নশীল হতে হবে। তবে আমরা আমাদের শিশুদের যত্ন নিতে পারবো। শিশুটা কি চায় সে সম্পর্কে আমাদের বুঝতে হবে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করতে হবে।

শিশুরা বেশি অসুস্থ হয় কেনঃ

শিশুরা বেশি অসুস্থ হয় কেন এ সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমে বলতে হয়। শিশুর অসুস্থ হওয়ার একমাত্র কারণ তাদের অভিভাবকের শিশুর প্রতি যত্নের অবহেলা। বিভিন্নভাবে আমরা তাদের দিকে সেভাবে গুরুত্ব দেই না যার কারণে ক্রমাগতই শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

কারণ তারা তো সবকিছু আপনাকে বোঝাতে পারেনা বা বলতে পারেনা। কিন্তু অভিভাবক হিসেবে আপনার শিশুর প্রতি খেয়াল রাখা উচিত। আসুন জেনে নেই কি কি কারণে শিশুরা বেশি অসুস্থ হয় নিচের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

শিশুদের হাত ধোয়ার প্রতি গুরুত্ব

শিশুরা প্রতিনিয়ত তারা তাদের হাত দিয়ে এটা ওটা নেড়ে বেড়ায় এবং সে হাত তারা মুখে দেয়। সেখান থেকে বিভিন্ন জীবাণু তাদের পেটে যায় যার ফলে তাদের অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বেশি হয় । এক্ষেত্রে শিশুদেরকে কিছুক্ষণ পরপরই ভালো করে হাত ধুয়ে দিতে হবে এবং তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তাহলে তারা রোগ-জীবন থেকে দূরে থাকবে।

পর্যাপ্ত ঘুম দেওয়া

আপনার শিশু সঠিকভাবে ঘুমাচ্ছে কিনা সেদিকে আপনার নজর দিতে হবে। আপনার শিশু যদি সঠিকভাবে না ঘুমায় এর পেছনে কারণ হলো সে যে কোন পুষ্টির অভাবেই ঠিকভাবে ঘুমাচ্ছে না। এজন্য শিশুর ঘুমের দিকে আপনাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। যদি ঠিকঠাক ভাবে ঘুমায় তাহলে তারা অনেক রোগ থেকে দূরে থাকবে।

খাবারের প্রতি যত্নশীল

শিশুদের খাবারের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত কারণ শিশুরা অনেক কিছুই খেতে চায় না। তাই তাদেরকে ভিটামিন জাতীয় খাবার ও শাকসবজি জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়াবেন। এতে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

শিশুদেরকে সময় দেওয়া

আপনার শিশুকে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিন তাহলে দেখবেন সে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবে । তাকে খেলাধুলা করান এবং সবসময়ই আনন্দ রাখার চেষ্টা করুন দেখবেন আপনার শিশু ভালো থাকবে ও সুস্থ থাকবে।

শিশুরা রাতে ঘুমায় না কেনঃ

বাচ্চার রাতে ঘুমায় না কেন এক্ষেত্রে দেখা যায় যে অনেক শিশুরাই দিনের বেলায় ঘুমায়। সে ক্ষেত্রে তারা রাত্রে বেলাতে ঘুমাতে চায় না আর এর জন্য শিশুদেরকে দিনের বেলায় কম ঘুমাতে দেওয়া উচিত। কিভাবে দিনে কম ঘুমাতে দিবেন সেটা যদি বলতে চাই সেক্ষেত্রে বলতে পারি।

আপনার শিশুকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যান তার সাথে খেলাধুলা করুন দেখবেন দিনে তার ঘুমের পরিমাণ কমে আসবে এবং রাত্রে সে ঠিকভাবে ঘুমাবে। এছাড়া শিশুরা যখন রাত্রে ঘুমায় অনেক সময় তাদের ক্ষুধা লাগে। ক্ষুধা লাগলে তারা চিৎকার করে কান্নাকাটি করে ঠিকভাবে ঘুমাতে পারে না।

বিশেষ করে শিশুদের পেট খুবই ছোট তাদেরকে অল্প অল্প খাওয়াতে হয় তাই তাদের কিছুক্ষণ পর পরই ক্ষুদা লাগে আর এই ক্ষুধা লাগার কারণে তারা রাত্রে ঠিক ভাবে ঘুমাতে পারে না। এক্ষেত্রে যখন তারা কান্নাকাটি করবে সে ক্ষেত্রে শিশুদেরকে খাওয়ালে আবার তারা ঠিক মতো ঘুমাবে।

এছাড়া শিশুরা অসুস্থ থাকার কারণে রাত্রে ঘুমাতে চায় না।তাই শিশুরা যাতে অসুস্থ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন ঘন ঘন তাদের বিছানা দিকে নজর দেবেন। বাচ্চাদের ঘুমের পরিবেশ যদি ঠিকভাবে না হয় সে ক্ষেত্রে তারা ঘুমাতে চায় না।

এজন্য বাচ্চাদের ঘুমের জন্য তাদের ঘুমের পরিবেশ তৈরি করা উচিত তবে তারা রাত্রে ঠিকভাবে ঘুমাবে।

মন্তব্যঃ

অবশেষে বলতে চাই আমার আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন যে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়। এছাড়া শিশুদের প্রতি যত্নশীল হওয়া, শিশুদেরকে কোন ধরনের ভিটামিন খাওয়ানো হয়।

শিশুরা কেন বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে এ সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। তাই আমার এই আর্টিকেলটি পড়া পরে যদি আপনাদের একটু ভালো লেগে থাকে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন।

ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url