মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ও তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহার
প্রিয় পাঠক আপনার অনেকেই জানতে চেয়েছেন মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় মধুর ব্যবহার সম্পর্কে। এ ব্যাপারে আপনারা অনেকেই ইতিমধ্যে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে দেখেছেন। যে কিভাবে ত্বকের যত্নে মধু ব্যবহার হয়ে থাকে।
আমি আপনাদেরকে আমার এই আর্টিকেলটিতে মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ও তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহার সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরেছি। আপনারা যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু পাবেন আশা রাখি।
ভূমিকাঃ
মধু একটি প্রাকৃতিক উপাদান। মধুতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। মধু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী আমাদের ত্বকের জন্যও ঠিক তেমনি উপকারী। আমরা আমাদের রূপচর্চায় বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। যার ফলে আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
আমরা ইচ্ছা করলেই এ প্রাকৃতিক উপাদান মধু দিয়ে আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি। প্রাচীনকাল থেকে মধু আমাদের ত্বকের জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে।
আমরা মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ও তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহার সম্পর্কে আমরা সঠিক ব্যবহার হয়তো অনেকেই জানিনা তাই এই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের জন্য কোন ফেসওয়াশ ভালো
মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ও তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহারঃ
চেহারা সুন্দর রাখতে কে না চায়। সবাই সবার কাছে সুন্দর থাকতে চায় আর এই সুন্দর থাকার জন্যই তো আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনি ব্যবহার করে থাকি। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি । আসুন জেনে নেই মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ও তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহার সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়ঃ
আমরা আমাদের ত্বকের যত্নের জন্য বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এ সকল কসমেটিক্সে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল থাকে। যা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। তারপরও আমরা এগুলো ব্যবহার করে থাকি।
তবে মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় হয়তো অনেকের জানা নেই। আসুন জেনে নেই মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মধু ও লেবুর ব্যবহার
ত্বক ফর্সা করার জন্য মধু ও লেবুর ব্যবহার করতে পারেন। কারণ লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি মধু ও লেবু একসাথে সংমিশ্রণ করে ব্যবহার করে আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন। এতে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা হবে।
মধু ও পেঁপের ব্যবহার
আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য মধু ও পেঁপে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি পেঁপে কুচি কুচি করে কেটে তার সাথে মধু মিশিয়ে পেস্ট করে নিবেন। তারপরে সেটি মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এরপর দেখবেন আপনার ত্বক অনেক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে গেছে।
মধু ও মুলতানি মাটির ব্যবহার
আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য মধু ও মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে পারেন। মুলতানি মাটি মুখের প্রসাধনি হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। আপন।২ চামচ মুলতানি মাটির সাথে ২ চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট করে নিবেন।
তারপর সে পেস্টটি আপনি আপনার মুখে খুব ভালোভাবে লাগাবেন এবং ২০ মিনিট অপেক্ষা করবেন। তারপর আপনি পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এতে আপনার ত্বকের ছিদ্রের ভিতরে জমিয়ে থাকা ময়লা দূর হবে এবং ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
আরো পড়ুনঃ রুপচর্চায় এলোভেরার ব্যবহার
মধু ও অ্যালোভেরার ব্যবহার
মধু ও অ্যালোভেরা ব্যবহারে ত্বক ফর্সা করার একটি অন্যতম উপায় আপনি মধু ও অ্যালোভেরার সাথে টক দই মিশিয়ে তোকে ভালোমতো মেসেজ করলে আপনার ত্বক হবে উজ্জ্বল ও দাগহীন কোমল ত্বক।
মধু ও কলার ব্যবহার
মধু ও কলার প্যাক তৈরি করে আপনি আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনাকে ২০ মিনিট মেসেজ করতে হবে । এই প্যাকটি লাগানোর পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এতে ত্বকের কালচে ভাব দূর হবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
মধু মুখে মাখার নিয়মঃ
মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করতে গেলে আপনাকে মধু মুখে মাখার নিয়ম জানতে হবে । আসুন আমরা জেনে নেই মধু মুখে মাখার নিয়ম।
আপনি যখন আপনার মুখে মধু মাখাবেন তার আগে আপনার মুখ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। মুখ পরিষ্কার করার পরে খুব আলতোভাবে আপনার মুখে মধু লাগাবেন এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন।
এরপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এই নিয়ম অনুযায়ী আপনি আপনার মুখে মধু লাগাতে পারেন।
মধু দিয়ে ফেসিয়ালঃ
মধু স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী ত্বকের জন্যেও তেমনি উপকারী। আমরা আমাদের ত্বককে ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি।
কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ও আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি। আমরা মধু দিয়ে ফেসিয়াল তৈরি করে আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি। আসুন জেনে নেই কিভাবে মধু দিয়ে ফেসিয়াল করবো।
ক্লিনজার হিসেবে মধুর ব্যবহার
মধুতে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। এটি আপনার ত্বকে জমে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। এটি ব্রণ এবং ত্বকের জ্বালা ভাব দূর করে। এজন্য আপনি মধু মুখে গলায় ও ঘাড়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিবেন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন তাহলে ভালো উপকার পাবেন।
মধুর ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন
মধু ফেস প্যাক তৈরি করার জন্য আপনাকে অর্ধেক কলা নিতে হবে এবং টুকরো টুকরো করে নিতে হবে। তারপর কলাটি নরম করে পেস্ট করে ফেলবেন।
এরপর এক টেবিল চামচ মধু তার সাথে ভাল করে মিশিয়ে নেবেন এবং এটি আপনার মুখে এবং ঘাড়ে লাগিয়ে দিবেন। ১০ মিনিট রাখার পরে আপনি এটি ধুয়ে ফেলুন দেখবেন ভালো ফলাফল পাবেন।
ফেসিয়াল টোনার হিসেবে মধুর ব্যবহার
মধু আপনার ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে । আপনি মাত্র দুটি উপাদান ব্যবহার করেই ফেসিয়াল টোনার তৈরি করতে পারেন। এজন্য আপনার প্রয়োজন শসা এবং মধু ।
শসার খোসা ছাড়িয়ে স্যার শসার রসের জন্য পিউরি বানিয়ে নিন। এবার ওই রসে মধু মিশিয়ে নিয়ে একটা বোতলে মিশ্রণটি ঢেলে ভালো করে নেড়ে নিন। একটি তুলার প্যাডর সাহায্যে লাগাতে পারেন ভালো উপকার পাবেন।
মুখে মধু মাখার উপকারিতাঃ
মধুতে রয়েছে এমন সব উপকারি উপাদান যা শুষ্ক ও তৈলাক্ত দুই ধরনের ত্বকের জন্যই অনেক উপকারী। এতে রয়েছে ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম এবং লৌহ ।
মধুতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক ও রয়েছে কার্যকর নির্যাস যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রতিদিন ত্বকের পরিষ্কারক হিসেবে আপনি মধু ব্যবহার করতে পারেন। মধুতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক এবং ব্যাকটেরিয়া বিরোধী উপাদান। যা আপনার ব্রণ দূর করতে সাহায্য করবে এবং ত্বকের লোমকূপের মধ্যে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাই আপনি প্রতিদিন মধু ব্যবহার করতে পারেন আপনার ত্বকের জন্য। মুখে মধু মাখার উপকারিতা আরো রয়েছে যেমন আপনি যদি আপনার মুখে মধু মাখেন সে ক্ষেত্রে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ত্বকের বয়সের ছাপ দূর হবে।
তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহারঃ
গরমের সময় তৈলাক্ত ত্বকের তেলতেলে ভাব অনেক অংশে বেড়ে যায়। এর ফলে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়া ত্বকের লোম কূপের ভেতরে বিভিন্ন ধুলাবালি জমে ত্বকে কালো কালো ছোপ পড়ে যায়। এজন্য আপনি তৈলাক্ত ত্বকে মধু ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি আপনার ত্বকে মধু যদি ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে আপনার ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর হয়ে যাবে এবং ব্রণও কমে যাবে। আমরা তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহার কিভাবে করব আসুন জেনে নেই।
মধু ও দুধ
আপনি আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য। আপনি আধা কাপ মধুর সঙ্গে আধা কাপ তরল দুধ মিশিয়ে নিবেন। এরপরে এই মিশ্রণটি আপনি আপনার ত্বকে লাগিয়ে রাখবেন। যতক্ষণ না শুকিয়ে যায়। যখন এটি শুকিয়ে যাবে তখন আপনি ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। ভালো ফলাফল পাবেন।
কলা ও মধু
ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য। আপনি একটি পাকা কলার অর্ধেক ও দুই টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এই ফেসপ্যাক মিশ্রণটি ২০ মিনিট আপনি আপনার ত্বকে লাগিয়ে রাখবেন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে হবে তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন।
ডিম, মধু ও লেবু
আপনি আপনার ত্বকে তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য ডিমের সাদা অংশ আধা চা চামচ মধু ও এক চা চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে নিবেন। এই মিশ্রণটি আপনি আপনার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। যখন দেখবেন মিশ্রণটি শুকিয়ে গেছে তখন আপনি ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর হয়ে যাবে।
হলুদ ও মধু
আপনি ১চামচ হলুদ গুড়ার সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে আপনার ত্বকে লাগাবেন। কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে ফেলবেন দেখবেন আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যাবে।
অলিভ অয়েল, মধু ও লেবু
১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ মধু ও আদা চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। সে মিশ্রণটি আপনি আপনার ত্বকে ভালোভাবে লাগাবেন। এরপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
মন্তব্যঃ
অবশেষে বলতে চাই আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন। মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ও তৈলাক্ত ত্বকে মধুর ব্যবহার। আশা রাখি উপকৃত হয়েছেন।
আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের একটুও ভালো লেগে থাকে। তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন হয়তো তারা উপকৃত হবে।
ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url