শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায় ও ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম
প্রিয় পাঠক, আমরা জানবো ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা কিভাবে করা যায়। আজকাল কেনা চায় নিজের রুপকে অপরুপ করে তুলতে। আমরা আমাদের রূপচর্চার জন্য বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। আর এই প্রসাধনী ব্যবহার করার ফলে আমাদের স্কিনে বিভিন্ন ধরনের প্রবলেম হয়।
যদি আমরা প্রসাধনী ছেড়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা এর মাধ্যমে নিজেদের বয়স অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিই। তবে এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবো । এই বিষয় নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ভূমিকা
আজকাল কেনা চায় নিজের রুপকে অপরুপ করে তুলতে। আর এর জন্য দরকার রূপচর্চা। আজকাল প্রসাধনী সামগ্রীর দাম শুনলে আমরা আঁতকে উঠি।
এছাড়া রাসায়নিক প্রসাধনী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ভরপুর। কিন্তু আপনি দৈনন্দিন খাবারে ব্যবহৃত বিভিন্ন শাক ও সবজি দিয়েও সহজেই নিজের রূপকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা করে অপরূপ করে তুলতে পারেন। এতে খরচও কম এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা
১. হলুদ এর উপকার
রূপচর্চায় হলুদের ভূমিকা অতুলনীয়। নানান রোগের জন্যে কাঁচা হলুদের রস অনেক উপকারি। ঘরোয়া চিকিৎসাতেও হলুদের অবদান অনেক। কাঁচা হলুদ দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা হয়। কাচা হলুদ বাটা শরীরে মেখে গোসল করলে সুন্দর সোনা বর্ণের আভা চলে আসবে দেহে।
২. আলুর উপকার
আলু রান্না ও খাবার ছাড়াও রূপচর্চায় আলুর অবদান অনেক। অনেকে গায়ের রং ফর্সা করার জন্যে আলু ব্যবহার করে থাকেন। অনেকেই জানেনা আলু ব্যবহার করে কিভাবে শরীরের রং ফর্সা করা যায়।
আলু কেটে নিয়ে কিছুক্ষণ ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিন। তারপর পানি থেকে তুলে হাতে পায়ে মুখে গলায় ঘষে ঘষে মেখে নিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করলে দেখবেন গায়ের রংফর্সা হয়ে যাবে ।
৩.গাজরের উপকার
রূপচর্চায় গাজরের অবদান অনেক। গাজরে প্রচুর ভিটামিন-এ রয়েছে। প্রতিদিন একটি করে কাঁচা গাজর খেলে আপনার শরীরে ভিটামিন-এ-এর অভাব হবে না। এতে চোখ, ত্বক- উভয়ের জন্যেই উপকার। আমাদের দেশে শীতকালে প্রচুর গাজর পাওয়া যায় এবং দামও খুব কম থাকে।
তাই সস্তায় আমরা প্রচুর ভিটামিন গ্রহণ করতে পারি। গাজর খেলে গায়ের রং ফর্সা হয়। পায়খানা পরিষ্কার হয়। চুল পড়ে না। চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে। গাজরের ফেসপ্যাক বানিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বকের সৌন্দয্যবৃদ্ধি পাবে।
৪. মধুর উপকারিতা
মধুর উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না। মধু ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী। ফেসপ্যাকও মধু দিয়ে তৈরি হয়। কয়েক ফোঁটা মধু ও কাঁচা দুধ একত্রে মিশিয়ে মুখে মাখলে মুখের রং উজ্জ্বল হয়।মধু ও বেসন একত্রে মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে মেখে ১০/১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুলে মুখের ত্বক খুব সুন্দর ও মসৃণ হয়।
কয়েক ফোঁটা মধু + কয়েক ফোঁটা লেবুর রস + ১ চা চামচ গাজরের রস + ১ চা চামচ ছোলার ডালের বেসন একত্রে পেস্টের মতো করে মুখে মেখে ২০/২৫ মিনিট রেখে স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন মুখ মসৃণ ও কোমল হয়ে উঠবে। এ প্যাকটি ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী।
৫. শসার উপকারিতা
রূপচর্চায় শসার অবদান অনেক। এছাড়া শসা রান্না-বান্নায়, খাওয়া-দাওয়ায় ব্যবহৃত হয়। মুখে কোনো কালো দাগ পড়লে কচি শসার রস মুখে নিয়মিত লাগালে কাল দাগ উঠে যায়। শসার রসের সাথে ৩/৪ ফোঁটা লেবুর রস মুখে মেখে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিলে মুখের রং উজ্জ্বল হয়।
চোখের নিচে অনেকেরই কালো দাগ পড়ে। শসার রস নিয়মিত মাখলে এ দাগ দূর হবে।
ফর্সা হতে চাইলে নিয়মিত শসার রসের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে, হাতে ও গায়ে নিয়মিত মাখলে গায়ের রং ফর্সা হয় । ত্বকের জন্যে শসা খুবই উপকারী।
৬. টমেটোর উপকারিতা
আমাদের দেশে শীতকালে প্রচুর পরিমানে টমেটো পাওয়া যায়। এ সময় দামও কম থাকে। টমেটোতে প্রচুর ভিটামিন-সি থাকে। তাই কাঁচা টমেটো খাওয়া খুবই উপকারী। ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি এগুলো ত্বকের জন্যে বেশ উপকারী। টমেটো খেয়ে এবং ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনি রূপচর্চা করতে পারেন অনায়াসে।
বয়স অনুযায়ী ত্বকের যত্ন
চেহারা হলো মানুষের ব্যক্তিত্ব ফুটিয়া তোলার অন্যতম উপায়। তাই চেহারা নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন বয়স অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত নিচে আলোচনা করা হলো।
১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সে ত্বকের যত্ন
১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সে সাধারণত ব্রণের সমস্যা হয়ে থাকে। এ সময় শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে এর কারনে ত্বকে তৈলাক্ত হয়ে ওঠে। তাই ব্রণের সমস্যা ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আমরা গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারি কারণ গ্রিনটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে টুথপেস্ট দিয়ে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা যায়
গ্রিন টি কিভাবে ব্যবহার করব প্রথমে একটি গ্রিন টি ব্যাগ ও এক কাপ গরম পানি নেব। তারপরে গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে।
গ্রিন টির টি ব্যাগটি এবং ভিজিয়ে রাখার পরে সেখান থেকে উঠিয়ে পানিটি ঠান্ডা করতে হবে। এবার তুলোর মাধ্যমে বা নরম কাপড়ের মাধ্যমে মুখে লাগাতে হবে তাহলে এর সমাধান হবে।
৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সে ত্বকের
বয়স ৩০ পার হলেই আমাদের ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা হতে থাকে। যেমন ত্ব কুঁচকে যায়, ত্বকের আদ্রতা হারিয়ে যায় এবং বয়সের ছাপ পড়ে যায়। এর জন্য আমাদের যা করণীয় তা হল আমাদেরকে ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
ত্বকের যত নেয়ার জন্য আমরা ব্যবহার করতে পারি অ্যালোভেরা ও কাঠ বাদামের প্যাক। এলোভেরা ও কাঠ বাদামের প্যাক যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলে আমাদের ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসবে। বয়সের ছাপ মিটে যাবে। কিভাবে ব্যবহার করব আমরা কার্ড বাদাম ও এলোভের।
চার থেকে পাঁচটি কাঠবাদাম ভিজিয়ে রাখবো এবং একটি এলোভেরার পাতা নিয়ে সেখান থেকে জেলটা বের করে পেস্ট তৈরি করব। পেস্টটা আমাদের ত্বকে লাগাবো ২০ থেকে ২৫ মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলব । এভাবে আমরা আমাদের বয়স অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিতে পারি।
মন্তব্য
অবশেষে আমি বলতে চাই যদি নিজের ত্বককে ভালো রাখতে চান। তাহলে প্রসাধনির ব্যবহার কমিয়ে অবশ্যই ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা করুন এবং বয়স অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিন। এতে আপনার ত্বকের কোন ক্ষতি হবে না।
আমার এই লেখাটা যদি একটুও ভালো লেগে থাকে আপনাদের কাছে, তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url