সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা ও পানি খাওয়ার নিয়ম

 কিভাবে বেশি বয়সে নিজেকে সুস্থ রাখা যায়

প্রিয় বন্ধুরা,অনেকে জানতে চেয়েছেন সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।প্রথমে আমি বলতে চাই পানির অপর নাম জীবন । আমাদেরকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিয়মিত পানি পান করতে হবে ।

সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা

 পানি আমাদের জীবনে অনেক উপকারী একটি তরল পানীয়। পানির উপকার বলে শেষ করা যাবে না। নিচে পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ভূমিকা

এ পৃথিবীতে পানি ছাড়া কোন প্রাণী বাঁচতে পারে না। তাই পানির অপর নাম জীবন। একজন সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা উচিত। পানি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।এছাড়া শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে পানির ভূমিকা অপরিসীম।

আরো পড়ুনঃ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

 অবশ্যই আমাদেরকে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। কি পরিমান পানি খেতে হবে ,অতিরিক্ত পানি খেলে কোন সমস্যা হয় কিনা, এছাড়া সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা ও পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। কষ্ট করে একটু পড়ে দেখুন, অনেক উপকৃত হবেন।

সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা

পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোন প্রাণী বাঁচতে পারে না। তাই আমাদেরকে বেঁচে থাকার জন্য পানি খেতে হয়। আমরা সকলে ঘুম থেকে উঠে অনেকেরই পানি খাওয়ার অভ্যাস আছে। এই অভ্যাসগুলি ভালো না খারাপ । এ বিষয়ে অনেকেই জানেনা, আমাদের শরীরের ৭০ শতাংশই পানি দিয়ে গঠিত।

পানি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পানির ভূমিকা অপরিসীম । পানি খাওয়ার সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায় সকালে খালি পেটে পানি খেলে । আসুন জেনে নেই সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানি পান করলে আমাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমের জন্য অনেক উপকারী হয়। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ।

 তাই আমাদেরকে নিয়মিত সকালে খালি পেটে পানি পান করা উচিত। এছাড়া পানি শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

বেশি বেশি পানি পান করলে আমাদের শরীরের ওজন দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। কারণ পানিতে কোন ক্যালরি নেই আর পানি ঘন ঘন পান করলে পেট ভরা রাখতেও সাহায্য করে। এছাড়া সকালে খালি পেটে পানি পান করলে তা বিপাককে দ্রুত করতে সাহায্য করে তাই এটি দ্রুত ক্যালরি ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করে

সকালে খালি পেটে পানি পান করলে আমাদের মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেনের আক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত পানি পান করলে মুখের ও দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে । মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করার জন্য প্রতিদিন সকালে আমাদের খালি পেটে পানি পান করা উচিত।

হজমে সহায়তা করে

সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম পানি খেলে তা হজমে সাহায্য করে । কারণ গরম পানি খাদ্য উপাদানকে ভাঙতে সাহায্য করে এতে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত উন্নতি হয়। তাই হজমের জন্য সকালে খালি পেটে পানি খাওয়া উত্তম।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে

সকালে খালি পেটে পানি খেলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে । মানসিক বিকাশ লাভ করে স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পায় মন প্রফুল্ল থাকে। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সকালে খালি পেটে পানি খেতে হবে।

দূষিত পদার্থ বের করে

সকালে খালি পেটে পানি খেলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ খুব সহজে বের হয়ে যায়। বর্জ্য বের করতে কিডনির পানি দরকার হয় । পানি খেলে প্রসবের সঙ্গে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়।

 ত্বক উজ্জ্বল করে

সকালে খালি পেটে পানি পান করলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়, তোকে ব্রণ কম হয়, ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করে। তাই ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানি খেতে হবে।

আরো পড়ুনঃ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়


 পানি খাওয়ার নিয়ম


নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে । অনেকে মনে করেন পানি যত বেশি খাওয়া যায় ততই ভালো কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এ ধারণা ঠিক না। অতিরিক্ত পানি পান করলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

আবার প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান করলেও দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা । তাই নিচে পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

১।একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ৯ গ্লাস পানি পান করা উচিত । তবে যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন কিংবা জ্বর বা ডায়রিয়া হলে পানীয় তরল খাবার আরও বেশি পরিমাণে খেতে হবে।

২।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি পান করলে এতে হজমের সাহায্য করে এবং দূষিত পদার্থ বের করে ফেলে।

৩।আমরা যখন খাবার খাব তো খাবারের মাঝখানে বারবার পানি খাওয়া যাবে না। এত গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে । খাবার শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি পান করা উচিত নয় এতে মেদ বেড়ে যাওয়া ও হজমে সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে । খাবার খাওয়ার ৪০ থেকে ৫০ মিনিট পর পানি পান করা উচিত।


৪।প্লাস্টিকের বোতলে পানি পান করার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই পানি পানির ক্ষেত্রে  বিপিএ মুক্ত বোতল ব্যবহার করা উচিত।

শীতকালে কতটুকু পানি খাওয়া উচিত

শীতকালে অনেকেই পানি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। যেখানে গরমের সময় ১২ থেকে ১৪ গ্লাস পানি খেত এবং শীতকালে ৫ থেকে ৬ গ্লাস পানি পান করে দিন কাটাচ্ছে । আমাদের শরীরে প্রায়ই তিনভাগে দুই ভাগেই পানি । পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে দেখা দিচ্ছে শারীরিক নানা সমস্যা। 

তাই সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকতে হলে পানির কোন বিকল্প নেই । শিতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ন্যূনতম পানির চাহিদাও কমে যায়।এটা আসলে ঠিক না , গরমকালের মত শীতকালেও বাড়তি পানি চাহিদা কিছুটা স্বাভাবিক নিয়মেই কমে যায় ।

বেশি বয়সের অনেকেরই ডায়াবেটিস, পেশার, কোলেস্ট্রল সহ নানা ধরনের ওষুধ খেতে হয়। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান না করলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা শুরু হতে পারে। শীতকালের ন্যূনতম দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করা উচিত ।এছাড়া শরীরের প্রয়োজনিয় পানির ২০ শতাংশ পূরণ হয় খাবারের জলীয় অংশ থেকে আসে।

 আর বাকিটা চা-কফি, দুধ, ঠান্ডা পা্নিয়, ফল ও বিভিন্ন ধরনের ড্রিংসের মতো জলীয় খাবার থেকে আসে। শরীরের পানির চাহিদা মেটাতে এই ঠান্ডায় পানি বেশি খেতে না পারলে। ফলের রস ,ডাবের পানি খেতে পারেন। যেসব খাবারে ও ফলে পানির পরিমাণ অনেক বেশি সেগুলো খেতে পারেন। পূরণ হবে শরীরে পুষ্টি ও যোগাবে শক্তি।


অতিরিক্ত পানি খেলে কি হয়

পানির অপর নাম জীবন। একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা উচিত । অনেক সময় আমরা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি পানি খেয়ে থাকি।

 যার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। কিন্তু আমরা বুঝতে পারি না আসলে এ সমস্যাটা কিসের জন্য সৃষ্টি হল। আসুন জেনে নেয়া যাক অতিরিক্ত পানি খেলে আমাদের কি কি সমস্যা হতে পারে নিচে দেওয়া 

পেশির দুর্বলতা 

অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে আমাদের শরীরে ইলেকট্রোলাইটের মাত্রা কমে গিয়ে শরীরে তার ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। এ কারণে আমাদের পেশির খিচুনি সহ বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে ।তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি খাওয়া উচিত নয়।

ক্লান্তিবোধ

অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে আপনার কিডনিতে অতিরিক্ত পানি নিঃসরণ করার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আর এই চাপের কারণে আপনার শরীর অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে এবং এর কারণে আপনার ক্লান্তি ভাব লাগতে পারে।

মাথা ব্যথা

অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে মস্তিষ্কের আকার বড় হয়ে মাথার খুলিতে চাপ দেয় আর এ কারণে অনেক সময় মাথা ব্যাথা হতে পারে।

বমি ভাব

অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে কিডনি অতিরিক্ত তরল নিঃসরণে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং সেই পানি শরিরে জমা হতে শুরু করে। আর এ কারণে অনেক সময় বমি ভাব, ডায়রিয়াসহ চাপ অনুভব করার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ঘনঘন প্রসাব করা

অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয় । একজন মানুষ স্বাভাবিকভাবে দিনে ৬ থেকে ৮ বার প্রসাব করে । আর আপনি যদি দিনে ১০ বারে বেশি প্রসব করেন তাহলে আপনি অতিরিক্ত পানি পান করেছেন বলে ধরা হবে।

মন্তব্য

অবশ্যই বলতে চায় , আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার উপায় পড়ার পরে আপনারা অবশ্যই জানতে পেরেছেন। সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা ও পানি খাওয়ার নিয়ম। এছাড়া আরো কি কি উপকার হয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন ।

 আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। আমারে আর্টিকেলটি পড়া পরে যদি আপনাদের একটুও ভালো লেগে থাকে ।তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন হয়তো তারা উপকৃত হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url