আপেল খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা ও পুস্টিগুন

সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা ও পানি খাওয়ার নিয়ম

 প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা জানতে চেয়েছেন আপেল খাওয়ার উপকারিতা, তাহলে তো বলতেই হয় আপেল খেতে কে না ভালোবাসে। ছোট বড় সকলের কাছেই আপেল একটি জনপ্রিয় ফল। আপেল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। আপেল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। 

আপেল খাওয়ার উপকারিতা

আমরা আপেল খাই আসলে আপেলে কি কি ধরনের উপকার আছে আমরা অনেকেই জানিনা। নিচে আপেল খাওয়ার উপকারিতা ,অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। আপনি পড়ে দেখুন ভালো লাগবে এবং উপকৃত হবেন এগিয়ে যান।

সূচনা

আপেল একটি পুষ্টিকর ফল । আপেল খেলে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যেহেতু আমাদের দেশে আপেল হয় না তাই আমাদের দেশে আপেলের দামটা একটু বেশি। সবাই সব সময় আপেল খেতে পারে না।


 এই পুষ্টিকর ফলটি খেলে আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া আমাদের ত্বক ভালো রাখে। একটি প্রবাদ আছে যে, প্রতিদিন যদি আপেল খাওয়া যায় তাহলে আমাদেরকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না এর অর্থই হচ্ছে আপেল আমাদের দেহকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
 
আসুন জেনে নেয়া যাক, আপিল খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোঃ

আপেল খাওয়ার উপকারিতা

আপেল সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল । ছোট বড় সবার কাছেই এই ফলটি প্রিয়। আপেলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগনে ভরপুর । এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আপেল খেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

 একটি কথা আছে, যে নিয়মিত আপেল খেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। আপেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই । আপেল দাঁতের জন্য অনেক ভালো । আপেল আমাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । তাই আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলোঃ

হার্ট ভালো রাখে
আপেল খেলে হার্ট ভালো থাকে তাই আমাদেরকে নিয়মিত আপেল খেতে হবে । আপেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপাদান সমূহ যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

 আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্টের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। ফলে হার্টে কোন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকেনা।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

যারা ওজন কমাতে চান তারা দৈনিক দুইটি করে আপেল খেতে পারেন। কারণ আপেল ওজন কমাতে সাহায্য করে। আপেলে রয়েছে প্রচুর ফাইবার যা কোন ক্যালরি ছাড়াই পেট ভরাতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আমাদেরকে আপেল খাওয়া উচিত । কারণ আপেল আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে।

হজমে সহায়তা করে

নিয়মিত আপেল খেলে পাকস্থলীতে হজমের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে।

ত্বক ভালো রাখে

নিয়মিত প্রতিদিন যদি আপেল খাওয়া যায় এতে আমাদের ত্বক অনেক উজ্জ্বল হয়, ত্বকের শুষ্কতা দূর হয় ,ত্বক মলিন রাখে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাও সমাধান হয়। তাই নিয়মিত আপেল খেলে ত্বকের জন্য অনেক উপকারি।

ডায়াবেটিসের সমস্যা কমায়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য আপেলের জুড়ি নাই । কারণ আপেলে রয়েছে পেকটিন নামের একটি উপাদান যা ইনসুলিনের পরিমাণ ঠিক রাখে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে । তাছাড়া আপেলের মধ্যে যে ফাইবার থাকে তা রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন আপেল খাওয়া উচিত।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

প্রতিদিন নিয়মিত আপেল খেলে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়। তাই ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে আমাদের নিয়মিত আপেল খাওয়া উচিত।


সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে আপেল খেলে হাট সুস্থ থাকে। আপেলে থাকা ফাইভার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে । এছাড়া রয়েছে আপেলে ভিটামিন সি এবং পটাশিয়াম এই উপাদানগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। 

অনেকেরই ঠিক মতো ঘুম হয় না দেরিতে ঘুমায় ইত্যাদি কারণে হজ্মে সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে আপেল খাওয়া সবচেয়ে ভালো। আপেল হজম জনিত সমস্যা দূর করে। বিকেলে অথবা রাত্রে আপেল খাওয়া হলে তা হজমে ব্যাঘাত ঘটায়।

 এর অর্থ হল রাতে আপেল খাওয়া হলে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং পরে অনেকটা সময় অস্বস্তি লাগে। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠে অথবা দুপুরের খাবারের আগে নাস্তা হিসেবে আপেল খেলে বেশি উপকার হয়।

যা ওজন কমাতে, ত্বক ভালো রাখতে, হজম ক্রিয়া বাড়াতে এবং দীর্ঘ সময় শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই বিশেষ করে সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম।

আপেল খেলে কি গ্যাস হয়

আপেল খেলে কি গ্যাস হয় এমন প্রশ্নের ক্ষেত্রে একথা বলতে পারি। যদি আমরা বিকেলে বা রাত্রে আপেল খাই তখন তা আমাদের হজমে ও অন্ত্রের কাজের ব্যাঘাত ঘটায় । এর অর্থ হল রাতে আপেল খাওয়া হলে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

 এর ফলে অনেকটা অসুস্থ বোধ লাগে । কারণ আপেলের জৈব এসিড পাকস্থলির এসিডকে স্বাভাবিকের তুলনায় বাড়িয়ে তোলে এবং অন্ত্রের প্রক্রিয়ার সাহায্য করে। তাই আপেল ফলটি রাত্রে না খাওয়াই ভালো।

সবুজ আপেলের উপকারিতা

আপেল খেতে কার না ভালো লাগে ছোট বড় সকলেই আপেল খেতে ভালোবাসে। লাল রঙের আপেলটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সবার কাছে। লাল আপেলের তুলনায় সবুজা আপেলে বেশি ভিটামিন থাকে । নিচে সবুজ আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

লিভার ভালো রাখে

লিভার ভালো রাখতে নিয়মিত সবুজ আপেল খাওয়া উচিত। কারণ আপেলের রস শরীরের ভেতর থেকে দূষিত পদার্থ ও ক্ষতিকর উপাদান বের করে ফেলে। এটি লিভার পরিষ্কার করার পাশাপাশি আপনাকে মুক্ত রাখবে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে। যদি সম্ভব হয় সকালে খালি পেটে সবুজ আপেল খাবেন।

ফুসফুস ভালো রাখে

ফুসফুস ভালো রাখতে সবুজ আপিল খাওয়ার জুড়ি নেই। যাদের হাঁপানি আছে তারা প্রতিদিন সবুজ আপেল খেলে উপকার পাবেন । কারণ সবুজ আপেল হাঁপানির ঝুঁকি কমায় এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

ত্বক ভালো রাখে

প্রতিদিন যদি সবুজ আপেল খাওয়া যায় এতে আমাদের ত্বক অনেক উজ্জ্বল হয়, ত্বকের শুষ্কতা দূর হয় ,ত্বক মলিন রাখে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাও সমাধান হয়। তাই নিয়মিত সবুজ আপেল খেলে ত্বকের জন্য অনেক উপকারি।

হার্ট ভালো রাখে

আপেল খেলে হার্ট ভালো থাকে তাই আমাদেরকে নিয়মিত সবুজ আপেল খেতে হবে । আপেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপাদান সমূহ যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

 আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্টের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। ফলে হার্টে কোন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকেনা।

আপেলের অপকারিতা

যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তাদের সাবধানতা অনুযায়ী আপেল খাওয়া উচিত। তাই আপেল খাওয়ার পরে যদি আপনার এলার্জির জন্য চুলকানি অথবা শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। আপেল দাতের জন্য অনেক উপকারী।

 তবে ঘন ঘন যদি আপেল খান তা দাতের জন্য অনেক ক্ষতিকর হতে পারে। তাই আপেল বা কোন এসিডিটিক ফল খাওয়ার পর আপনার মুখ ব্রাশ করা উচিত । অনেক ক্ষতিকর কারণ আপেলের বীজ যদি পেটে চলে যায় এতে উপকারের চাইতে ক্ষতির আশঙ্কায় বেশি থাকে ।

 তাই আপেল খেতে হবে আপেলের বীজ গুলো বেছে । তাছাড়া আপেল শিশুদের ক্ষেত্রে ছোট ছোট টুকরো করে দিতে হবে তাহলে ছোট বাচ্চারা খুব সহজে আপেলটি খেতে পারবে। তা না হলে তাদের গলায় যেকোনো সময় আটকে যেতে পারে। তাই ছোট বাচ্চাদেরকে সতর্কতার সাথে আপেল খাওয়াতে হবে।

আপেলের পুস্টিগুন

আপেল পুষ্টিগুনে ভরপুর সমৃদ্ধ একটি ফল।এটি খেতে সবাই ভালোবাসে । একটি ১০০ গ্রাম আপেলে রয়েছে খাদ্য শক্তি ৫২ কিলো ক্যালরি , আমিষ ০.২৬ গ্রাম, শর্করা ১৩.৮১ গ্রাম, ফাইভার ২.৪ গ্রাম, চর্বি ০.১৭ গ্রাম, ভিটামিন এ ৫৪ আই ইউ।

 ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ই ০.১৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১০৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম লোহ 0.১২ মিলিগ্রাম, জিংক 0.0৪ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১১ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫ মিলিগ্রাম।

মন্তব্য


প্রিয় বন্ধুরা , অবশেষে বলতে চাই আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনারা আপেল খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন । আপেল থেকে কি কি ধরনের উপকার আমরা পেয়ে থাকি আপনারা বুঝতে পেরেছেন অবশ্যই ।
 
তাই আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের একটুও ভালো লেগে থাকে । তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন। হয়তো তারা উপকৃত হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url