কোন সময় পড়লে পড়া ভালো মনে থাকবে
প্রিয় পাঠক আপনার অনেকে জানতে চেয়েছেন, কোন সময় পড়লে পড়া ভালো মনে থাকবে এ নিয়ে অনেকে ইন্টারনেটে খুঁজাখুঁজি করেন। আমি আপনাদেরকে আমার এই আর্টিকেলে কোন সময় পড়লে পড়া ভালো মনে থাকবে, এ সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করেছি।
যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে এর সঠিক উত্তরটি খুঁজে পাবেন এবং উপকৃত হবেন।
ভূমিকাঃ
বর্তমান সময়ে অভিভাবকরা বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তারা ভেবে পাচ্ছেন না কিভাবে তাদেরকে পড়ালে ভালো হয়। কোন সময় পড়ালে পড়া ভালো মনে থাকবে। পড়া মনে রাখার জন্য কি কি করা উচিত।
কম সময়ে বেশি পড়ার উপায়।পড়ায় মন বসানোর উপায় এগুলো নিয়ে বেশ চিন্তিত ।আসুন এ সকল সমস্যার সমাধান দেয়ার জন্য এ বিষয়গুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । আশারাখি মনোযোগ দিয়ে পড়লে উপকৃত হবেন।
কোন সময় পড়লে পড়া ভালো মনে থাকবেঃ
কোন সময় পড়লে পড়া ভালো মনে থাকবে , এ প্রশ্নের উত্তর জানতে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ইচ্ছা পোষণ করেছেন। শিশুদের লেখাপড়া উত্তম সময় হলো সকালবেলা। সকালবেলা পড়া ভালো মুখস্ত হয়।
আপনি পেট পুরে খেয়ে পড়তে বসেন তাহলে দেখবেন আপনার পড়ায় সেরকম মনোযোগ থাকবে না। স্বাস্থ্যকর ঘুমের পর সকালবেলা ব্রেন থাকে এনার্জিতে ভরপুর। ফলে সকালবেলা শিক্ষার্থীরা যা পড়ে খুব সহজে এবং অল্প সময়ে তা ব্রেনের মেমোরি সেন্টারে গেথে যায়।
অন্য সময় পড়াশোনা করলে সাধারণত তেমন একটা হয় না। তাই শিক্ষার্থীদের সকালবেলা পড়াশোনা করতে উৎসাহিত করা উচিত। পড়াশোনা করতে গেলে একেবারে পেট পুরে খেয়ে পড়াশোনা করলে অলসতা চলে আসে এবং পড়া মনোযোগ কম হয়।
তাই পড়াশোনার সময় হালকা খাবার খেয়ে পড়াশুনা করতে যাওয়া উচিত। কারণ একেবারে খালি পেট হলে ব্রেনে গ্লুকোজ সরবরাহ কম থাকবে ফলে পড়াশোনা ঠিকমতো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।তাই হালকা খাবার খেয়ে পড়াশোনা করলে এতে আমাদের অলসতা আসবে না।
পড়াশোনায় মনোযোগ বসবে এবং আমাদের মেমোরি ঠিকভাবে কাজ করবে। তাই সকাল বেলা যদি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে তাহলে তাদের পড়া খুব সহজে হবে এবং পড়া মনে থাকবে। শিক্ষার্থীরা অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন যে কোন সময় পড়লে পড়া ভালো মনে থাকবে আশা করি উত্তরটি দিতে পেরেছি।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
পড়া মনে রাখার সহজ উপায়ঃ
পড়াশোনা করার জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে পড়াশোনা করা উচিত। মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে হবে। আসুন জেনে নেয়া যাক, পড়া মনে রাখার সহজ উপায় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করা
পড়াশোনা করার জন্য অবশ্যই একটি রুটিন থাকতে হবে। কেননা রুটিন অনুযায়ী যদি নিয়মিত পড়াশোনা করা যায় তাহলে সেই পড়া মনে থাকবে । তাই একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে রুটিন মাপিক পড়াশোনা করতে হবে।
মনোযোগ সহকারে পড়া
পড়া মনে রাখা সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো মনোযোগ সহকারে পড়া। মনোযোগ সহকারে পড়লে দ্রুত পড়া মুখস্ত হয় এবং আপনি যে বিষয় শিখতে চাচ্ছেন তা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। তাই আপনি পড়া মুখস্ত করার জন্য যত পদ্ধতি অবলম্বন করেন না কেন।
যদি মনোযোগ সহকারে না পড়েন তাহলে কখনোই সে পড়া মুখস্ত করতে পারবেন না । তাই অনেক দিন পড়া মনে রাখার জন্য মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
পড়া রিভাইজ করা
দীর্ঘদিন ধরে পড়া মনে রাখতে হলে আমাদের প্রতিনিয়ত পড়া রিভাইজ করতে হবে। কারণ আমি আজকে যা পড়েছি আগামীকাল তা মনে নাও থাকতে পারে। তাই প্রতিনিয়ত আমাদের পড়া রিভাইজ করতে হবে। তবে আমাদের পড়া মনে থাকবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে
পড়া মনে রাখতে হলে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশোনা করার পর আমাদের ব্রেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই আমাদের ব্রেনের কিছু সময়ের জন্য বিশ্রামের দরকার হয়। ব্রেনের বিশ্রামের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে।
বন্ধুদের সাথে পড়া শেয়ার করা
পড়া মনে রাখার আরেকটি অন্যতম সেরা উপায় হচ্ছে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে পড়া শেয়ার করতে পারেন। আপনি আজকে যে পড়াটা মুখস্ত করলেন আগামীকাল সেই পড়াটা আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
এতে করে আপনার পড়ার যদি কোন ধরনের সমস্যা থাকে তা জেনে নিতে পারবেন। এছাড়াও পড়া বুঝতে সমস্যা হলেও বন্ধুদের সাথে আলোচনা মাধ্যমে তার সমাধান করতে পারবেন।
লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস করা
দীর্ঘদিন পড়া মনে রাখতে হলে আপনাকে লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।আপনি একটা বিষয় নিয়ে পড়ছেন, পড়তে পড়তে দেখা যাচ্ছে এমন কিছু আসে যা আপনি মুখস্ত করতে অনেক সময় লাগছে।
সে সময় আপনি সেগুলো লিখে রাখতে পারেন। লিখে রাখলে কি হবে আপনি দ্রুত সেগুলো আপনার মেমোরিতে গেথে যাবে এবং আপনি সহজে সেগুলো ভুলবেন না। তাই লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস করলে মনে রাখা সহজ হয়।
জোরে জোরে পড়ুন
আপনি যদি জোরে জোরে পড়েন তাহলে সে পড়াটা আপনার মাথায় খুব দ্রুত ঢুকে যায়। যেমন, একটি গান যখন শোনেন তখন তার দ্রুত মনে পড়ে। যা পড়ছেন তা নিজের কানে জোরে প্রবেশ করলে দ্রুত মুখস্থ হয়ে যায়। তাই পড়াশোনা মনে রাখার জন্য জোরে জোরে পড়তে হবে।
বিরতি দিয়ে পড়াশুনা করুন
একটানা অনেকক্ষণ পড়লে অস্থিরতা চলে আসবে । বেশিক্ষণ পড়ার পর ১০ থেকে ২০ মিনিট হেঁটে আসুন। এতে দেহের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে এবং মস্তিষ্ক ভীষণ পাবে। ফলে পড়াই মনোযোগ বাড়বে।
পড়া মনে রাখার খাবারঃ
পড়া মনে রাখার জন্য অনেক ধরনের খাবার রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য খাবার হচ্ছে।
বাদাম
গবেষণায় দেখা গেছে, বাদামের মধ্যে এমন কিছু বিশেষ উপাদান রয়েছে যা ব্রেনের বিকাশ ঘটাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্রেনে কোন কথা বেশি সময় ধরে মনে রাখতে সাহায্য করে বাদাম। এছাড়া বাদামে আরো অনেক ধরনের পুষ্টি রয়েছে এ কারণে নিয়মিত বাদাম খেতে হবে।
ডিম
ডিম একটি পুষ্টিকর খাবার। ডিমে রয়েছে সেলিনিয়াম ওমেগা ৩ যার মাধ্যমে আমাদের নার্ভ ভালো থাকে। সকালে খাবার খাওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা আগে ডিম খেলে বেশি ভালো হয় । পড়া মনে রাখার জন্য আমাদের ডিম খেতে হবে।
মাছ
পোড়া মনে রাখার জন্য আমাদেরকে চর্বিযুক্ত মাছ খেতে হবে। চর্বিযুক্ত মাছ ওমেগা থ্রি মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
মধু
পড়া মনে রাখার জন্য মধু খেতে হবে । মধুতে থাকা বিভিন্ন যোগ্য সরাসরি ভালো স্মৃতি শক্তির জন্য উপকারী।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ
মিষ্টি কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে খনিজ থাকে। যা ব্রেনের জন্য অনেক উপকারী ।তাই পড়া মনে রাখার জন্য আমরা মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেতে পারি।
কম সময়ে বেশি পড়ার উপায়ঃ
কম সময়ে বেশি পড়ার উপায় ছাত্র-ছাত্রীদের অবশ্যই জানা উচিত। পড়ালেখা ভালো করতে সবাই চায় তবে ভালো করতে চাইলেও ভালো করা যায় না। অনেকে আছে যারা পড়াশোনা করতে ভালোবাসে আবার অনেকে আছে যারা পড়াশোনা করতে চায় না।
কম সময়ে ভালো পড়াশোনা করতে গেলে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে তবে আপনি কম সময়ে বেশি পড়াশোনা করতে পারবেন। এছাড়া সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে।
আপনার যে সাবজেক্টে পছন্দের সে সাবজেক্টে পড়তে হবে তাহলে দেখবেন পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। খুব সহজেই কম সময়ের মধ্যেই বেশি পড়াশোনা করতে পারবেন।
পড়ায় মন বসানোর উপায়ঃ
আমরা পড়াশোনা করতে গেলে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন কারণে আমাদের মনোযোগ অন্যদিকে চলে যায়। ঠিকভাবে আমরা আমাদের পড়াশোনায় মনোযোগ বসাতে পারিনা। আসুন জেনে নেয়া যাক পড়ায় মন বসানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
টার্গেট তৈরি করা
একটি টার্গেট তৈরি করে পড়াশোনা করতে হবে । আপনি যখন পড়তে বসবেন তখন আপনি আগে থেকেই টার্গেট করে নেবেন। আপনি আজকে কি কি পড়বেন আপনি যদি নির্ধারিত করে নেন কি কি পড়বেন তাহলে দেখবেন আপনি আপনার পড়ায় মন বসাতে পারবেন এবং খুব সহজেই সে পড়াগুলো আপনি পড়তে পারবেন।
বিরতি দেওয়া
আপনি যখন পড়তে বসবেন তখন একটানা দীর্ঘক্ষণ না পড়ে মাঝে মাঝে বিরতি দেবেন। তাহলে দেখবেন আপনার পড়াশোনায় মন বসবে এবং নিজেকে অনেক ফ্রেশ লাগবে।
সোশ্যাল মিডিয়া দূরে রাখা
পড়াশোনা করার সময় আপনি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকবেন। সোশ্যাল মিডিয়া যখন আপনার হাতের কাছে থাকবে । যেমন মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, টেলিভিশন তখন দেখা যাবে আপনার পড়ায় সেভাবে মনযোগ দিতে পারবেন না। তাই পড়াশোনা করতে গেলে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
রাত জাগা ত্যাগ
পড়াশোনায় মনোযোগ বসাতে হলে আপনাকে রাত জেগে পড়াশোনা অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। রাত না জেগে আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে সকাল সকাল পড়তে বসি তাতে আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং পড়াশোনা খুব তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়।
লেখক এর মন্তব্যঃ
পরিশেষে বলতে চাই আমার এই আর্টিকেলটিতে কোন সময় পড়লে পড়া ভালো মনে থাকবে। পড়ায় মন বসানোর উপায়। কম সময়ে বেশি পড়ার উপায়, পড়া মনে রাখার সহজ উপায় সম্পর্কে আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনারা বুঝতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।
আমার এই আর্টিকেলটি পরে যদি আপনারা উপকৃত হন। তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। হয়তো তারাও উপকৃত হবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url